অনেক সময় মেয়েরা সন্দেহ করে যে তারা প্রেগন্যান্ট কি না। তখনই সবচেয়ে সহজ সমাধান হিসেবে ব্যবহার করা হয় প্রেগনেন্সি টেস্ট স্ট্রিপ। এটি একটি হোম-ইউজ ডিভাইস যা প্রস্রাবের মাধ্যমে প্রেগন্যান্সি শনাক্ত করতে সাহায্য করে। তবে এই টেস্ট স্ট্রিপ নিয়ে অনেক মেয়ের মনে নানা প্রশ্ন থাকে। এই আর্টিকেলে আমরা সেই সব প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছি।
প্রেগনেন্সি টেস্ট স্ট্রিপ কীভাবে কাজ করে
প্রেগনেন্সি টেস্ট স্ট্রিপ মূলত ইউরিনে hCG (human chorionic gonadotropin) হরমোন শনাক্ত করে। যদি এই হরমোন থাকে, তাহলে স্ট্রিপে একটি নির্দিষ্ট লাইন দেখা যায় যা ইঙ্গিত করে যে আপনি প্রেগন্যান্ট।
কবে টেস্ট করা সবচেয়ে উপযুক্ত
অনেকেই জানতে চান, কখন টেস্ট করলে সঠিক ফল পাওয়া যাবে। সবচেয়ে ভালো সময় হলো মিসড পিরিয়ডের ১ম দিন বা তার পরদিন। অনেকে পিরিয়ড হওয়ার ৫-৭ দিন পরেও টেস্ট করে থাকেন, সেটাও কার্যকর হতে পারে।
সকালে টেস্ট না করলে কি ভুল রেজাল্ট আসবে
সকালের প্রথম ইউরিনে hCG হরমোনের ঘনত্ব বেশি থাকে, তাই তখন টেস্ট করলে বেশি নির্ভুল ফলাফল পাওয়া যায়। তবে দিনেও টেস্ট করা যায়, যদিও তখন ফলাফল কিছুটা দুর্বল বা অস্পষ্ট হতে পারে।
একটি লাইন নাকি দুটি লাইন, কোনটা কী বোঝায়
- একটি লাল লাইন: টেস্ট নেগেটিভ অর্থাৎ প্রেগন্যান্ট নন
- দুটি লাল লাইন: টেস্ট পজিটিভ অর্থাৎ প্রেগন্যান্ট
- একটি গাঢ় লাইন ও একটি হালকা লাইন: পজিটিভ, তবে হরমোনের পরিমাণ কম, ফলে লাইনটি হালকা
- কোনো লাইন না থাকলে: টেস্টটি ঠিকভাবে হয়নি বা স্ট্রিপ নষ্ট
হালকা লাইন এলেও কি আমি প্রেগন্যান্ট
হালকা হলেও যদি দুটি লাইন থাকে, তবে সেটি পজিটিভ ফল হিসেবে গণ্য হয়। কারণ সামান্য পরিমাণ hCG থাকলেও তা শনাক্ত করতে পারে স্ট্রিপ।
বেশি পানি খেলে কি টেস্টের ফলাফলে প্রভাব পড়ে
হ্যাঁ, বেশি পানি খেলে ইউরিন পাতলা হয়ে যায় এবং hCG হরমোনের ঘনত্ব কমে যেতে পারে। ফলে টেস্টের ফলাফল ভিন্ন বা দুর্বল হতে পারে।
একই দিনে একাধিকবার টেস্ট করলে কি সমস্যা হয়
না, সমস্যা হয় না। তবে বারবার টেস্ট করার প্রয়োজন সাধারণত পড়ে না। যদি সন্দেহ থাকে, তাহলে ১-২ দিন পর আবার টেস্ট করা যেতে পারে।
প্রেগনেন্সি টেস্ট স্ট্রিপ কি ১০০ ভাগ নির্ভুল
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এটি সঠিক ফলাফল দেয়, তবে কিছু ক্ষেত্রে ফলাফল ভুল হতে পারে যেমন:
- স্ট্রিপের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে
- ভুলভাবে ব্যবহার করলে
- খুব বেশি আগেভাগে টেস্ট করলে
এজন্য ফলাফল নিশ্চিত করতে প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
প্রেগনেন্সি টেস্ট গোপনে করা যায় কি
হ্যাঁ, এটি ঘরে বসেই করা যায় এবং কাউকে জানাতে হয় না। এজন্য এটি অনেকের কাছে সহজ ও সুবিধাজনক একটি সমাধান।
কোন প্রেগনেন্সি টেস্ট স্ট্রিপ সবচেয়ে ভালো
বাংলাদেশে অনেক কোম্পানির স্ট্রিপ পাওয়া যায়, যেমন:
- Prega News
- i-Can
- Checkmate
আপনার বাজেট ও প্রয়োজনে যেটি সহজলভ্য, সেটি ব্যবহার করা যেতে পারে।
টেস্ট নেগেটিভ এসেছে কিন্তু পিরিয়ড হয়নি কেন
এমন হলে কয়েকদিন পর আবার টেস্ট করা উচিত। অনেক সময় hCG হরমোনের মাত্রা বাড়তে সময় লাগে। যদি দ্বিতীয়বারেও নেগেটিভ আসে, তাহলে ডাক্তার দেখানো দরকার।
উপসংহার
প্রেগনেন্সি টেস্ট স্ট্রিপ ব্যবহার করা সহজ, দ্রুত এবং গোপনীয়। মেয়েরা এটি ব্যবহার করে প্রাথমিকভাবে জানতে পারেন তারা প্রেগন্যান্ট কি না। তবে সঠিক ফল পেতে সঠিক সময়, নির্দেশনা এবং পদ্ধতি জানা জরুরি। সন্দেহজনক ফলাফলে অবশ্যই একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।